ভাই, আমি সুমাইয়াকে মাইরা ফালাইছি—স্ত্রী খুনের পর সম্বন্ধীকে ফোনে স্বামী

‘ভাই, আমি সুমাইয়াকে মাইরা ফালাইছি, আমি আর বাঁচমু না, আমি আত্মহত্যা করুম’—ফুঁপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে কথাগুলো বলছিলেন রমজান আলী। ওপাশ থেকে প্রবাসী সম্বন্ধী হতভম্ব হয়ে শুনছিলেন তার কথা।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকালে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব জামালপাড়ার নিজ ঘর থেকে সুমাইয়ার (২০) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের শরীরের আঘাতে চিহ্ন দেখে প্রাথমিকভাবে এটি হত্যা বলে ধারণা করছে পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সুমাইয়াকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন রমজান।

ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়া রমজান আলীকে (২৮) কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বান্দরবান থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ প্রথমে তার অবস্থান শনাক্ত করে। পরে এক আত্মীয়কে দিয়ে কৌশলে তাকে ডেকে এনে গ্রেপ্তার করে।

নিহত সুমাইয়া মহেশখালীর পানিরছড়া এলাকার হারুন রশিদের মেয়ে। তিন বছর আগে তার বিয়ে হয় পূর্ব জামালপাড়ার রাজমিস্ত্রি শ্রমিক রমজান আলীর সঙ্গে। তাদের সংসারে রয়েছে দুই সন্তান।

নিহত সুমাইয়ার দাদা মোহাম্মদ ছৈয়দ কবির জানান, বিয়ের পর থেকেই রমজান আলীর সঙ্গে সুমাইয়ার দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল না। রমজান ছিল সন্দেহপ্রবণ ও মেজাজি। সামান্য কারণেই সুমাইয়াকে মারধর করত। পারিবারিক কলহ দিন দিন বাড়তে থাকলে কয়েকবার সালিশ বৈঠকও হয়, কিন্তু তাতে কোনো সমাধান হয়নি। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে সুমাইয়াকে হত্যা করে পালিয়ে যান রমজান আলী। পালানোর সময় নিজের প্রবাসী সম্বন্ধীকে ফোন করে হত্যার দায় স্বীকার করেন তিনি।

মহেশখালী থানার ওসি কাইছার হামিদ জানান, ঘটনার সময় ঘরের বাইরে উঠোনে খেলছিল তাদের দুই বছরের কন্যা। পাশের নূরানী মাদ্রাসা থেকে ফিরে এসেছিল সাত বছরের ছেলে সাইফুল ইসলাম। ভাত চাইতে গিয়ে মা সুমাইয়ার কোনো সাড়া না পেয়ে ঘরে ঢুকে তার নিথর দেহ দেখতে পায় সাইফুল। তার চিৎকারে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা।

ওসি বলেন, লাশের গলায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। গ্রেপ্তার রমজান আলীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

জেজে/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm