চট্টগ্রামের রাউজানে ভাষাসৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে ফজলুল হকের ৩৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘শত পরিবারে লক্ষ টাকার হাসি’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
১৪ মার্চ (শুক্রবার) বিকাল ৩টায় উপজেলার পশ্চিম গুজরায় হযরত ওচমান আলী মাস্টার (রহ.)-এর বাড়িতে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
মরহুমের ছেলে ও গণপাঠাগারের পৃষ্ঠপোষক এ কে শওকত হোসাইন হিরুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দীন জাবেদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. নিজাম উদ্দিন দেওয়ান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দীন জাবেদ বলেন, ‘জাকাত করুণার দান নয়, এটি বঞ্চিতদের পাওনা অধিকার। রমজান মাসে সিয়াম সাধনা মানবিক গুণাবলি বিকাশে সহায়ক। এর মাধ্যমে বিত্তশালীরা দরিদ্র মানুষের দুঃখ-কষ্ট অনুধাবন করতে পারেন, ক্ষুধা-তৃষ্ণার যন্ত্রণা অনুভব করতে পারেন এবং অসহায় ও নিরন্ন মানুষের যন্ত্রণা বুঝতে পারেন। তাই তাদের ঘৃণা ও অবহেলা নয়, বরং ভালোবাসা ও সহযোগিতার হাত বাড়ানো উচিত।’
বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে ফজলুল হক গণপাঠাগারের এ কর্মসূচি একটি অনন্য উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করে তিনি বলেন, জাকাত একটি ফরজ ইবাদত। এটি দয়া বা দান নয়; বরং বঞ্চিতদের প্রাপ্য অধিকার। যেহেতু এটি তাদের অধিকার, তাই প্রাপকদের সম্মানের সঙ্গে তাদের পাওনা প্রদান করা উচিত, যাতে তারা সন্তুষ্ট থাকেন।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. নিজাম উদ্দিন দেওয়ান বলেন, সদকা ও জাকাত এমনভাবে দেওয়া উচিত, যা গ্রহীতা স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে নগদ অর্থই সর্বোত্তম, কারণ এর মাধ্যমে গ্রহীতা নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী তা ব্যয় করতে পারেন।
প্রযুক্তিবিদ এ কে শওকত হোসাইন বলেন, জাকাত প্রদান করা ফরজ ও সদকা আদায় করা ওয়াজিব। কিন্তু কাউকে হেয় জ্ঞান করা, তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা বা কারও সম্মানহানি করা সম্পূর্ণ হারাম ও নাজায়েজ। অনেক জাকাতদাতা নিম্নমানের শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ করে জাকাতের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করছেন এবং একই সঙ্গে গ্রহীতাদেরও অপমান করছেন।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য সামছুল আলম ও মফিজ মিয়া ফারুকী, মো. তকি সিকদার, সার্বজনীন জামে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মো. দিদার কামাল খান, পৃষ্ঠপোষক প্রবাসী মো. এমরান, আবদুস সালাম আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. বখতেয়ার উদ্দীন।
উত্তর গুজরা ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি মো. শওকত নোমান বাবুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে অতিথিদের মধ্যে আরও ছিলেন সমাজসেবী মো. রফিকুল আলম, মো. সেলিম সিকদার, অ্যাডভোকেট দৌলত খান, মো. আলমগীর, ইপসা উন্নয়ন সংস্থার কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত হাফেজ রুবেল, ইফতেখার ইফতি, মো. আজাদ।
অনুষ্ঠানে মরহুম এ কে ফজলুল হক চেয়ারম্যানের পরিবারের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তার ছোট ছেলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিসংখ্যানবিদ শওকত আল-আমিন।