চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় ২১ বছর বয়সী এক তরুণীকে বেড়ানোর প্রলোভনে পতেঙ্গা সৈকতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে মোহাম্মদ বদো নামে এক বিবাহিত যুবকের বিরুদ্ধে। তরুণীর সাবেক প্রেমিক পরিচয় দেওয়া এই ব্যক্তি ছাড়াও ঘটনায় আরও ৬-৭ জনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
ঘটনাটি গত ১০ জুলাই বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত সময়ের। চরলক্ষ্যা ইউনিয়নের হাজী আবুল হোসেনের বাড়ি থেকে বদো কৌশলে তরুণীকে মাতব্বর ঘাট হয়ে পতেঙ্গা সৈকতে নিয়ে যান। রাত ৯টার পর তাকে আবার কর্ণফুলীর একটি বাসায় নিয়ে গিয়ে আটকে রাখা হয় এবং সেখানে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ ওঠে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী যুবক জানান, রাতে মেয়েটিকে ক্লাবে নিয়ে যাওয়া হয়। যাওয়ার আগে ক্লাবের সিসিটিভি ক্যামেরার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। সেখানে ৬-৭ জন যুবক মেয়েটিকে ঘিরে ফেলে। রাত ১টার দিকে কয়েকজন এসে মেয়েটিকে বাড়িতে রেখে যায়।
কর্ণফুলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল পতেঙ্গা হওয়ায় তাদের পতেঙ্গা থানায় যেতে বলেছি।
অথচ কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি মুহাম্মদ শরীফ দাবি করেছেন, এমন কোনো অভিযোগ তাদের কাছে আসেনি।
স্থানীয়দের প্রশ্ন—তাহলে ভিকটিম পরিবারের থানায় যাওয়া এবং পুলিশের পরামর্শের বিষয়টি সত্য হলে ওসি কেন জানেন না? পুলিশের এই দ্বৈত অবস্থান প্রশাসনের নির্লিপ্ততা ও দায়িত্বহীনতার প্রমাণ বলেই মনে করছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোছাম্মৎ শাহানাজ বেগম বলেন, এটা ধর্ষণের ঘটনা নয়, আমরা বিষয়টি দেখছি।
অথচ স্থানীয়দের দাবি, দুই ইউপি সদস্য আর কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ঘটনাটি ‘স্ট্যাম্পে সমঝোতা’ করে টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করার চেষ্টা করছেন। এতে এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
ভিকটিমের ফুফাতো ভাই রফিক জানান, আমরা থানায় গিয়েছিলাম, পুলিশ সামাজিকভাবে সমাধান করতে বলেছেন। এখনো সিদ্ধান্তে আসেনি।
তবে বিয়ের সম্ভাবনা নাকচ করে বিষয়টি অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণের দিকে মোড় নিতে পারেন কিনা, এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।
চট্টগ্রাম জজ কোর্টের আইনজীবী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ধর্ষণ বা চেষ্টার মতো ঘটনা আইনের আওতাভুক্ত। সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি চেষ্টাই অবৈধ। পুলিশকে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।
জেজে/ডিজে