চকরিয়ার নবজাতককে চট্টগ্রামে বিক্রি, দুই নানি আটক

কক্সবাজারের চকরিয়ায় ২০ দিন বয়সী নাতিকে বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে আপন নানির বিরুদ্ধে। একাজে সহায়তা করছেন নানির বোন ও ছেলে। তবে এখনও ওই নবজাতককে উদ্ধার করা যায়নি।

বুধবার (২৭ আগস্ট) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের মালুমঘাট ২ নম্বর ওয়ার্ড ডুমখালী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার থানায় অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত নানিকে পুলিশ আটক করেছে। বুধবার ওই নানিকে সঙ্গে নিয়ে নাতিকে বিক্রিতে সহায়তাকারীদের আটক ও শিশু উদ্ধারে অভিযান শুরু করেছে। তবে এর মধ্যে নানি বোনকেও আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ওসি বলেন, অভিযানে যাওয়া অফিসার শিশু বিক্রিতে সহায়তাকারী নানির বোনকে আটক করে থানায় আনছে। নানা মাধ্যমে চাপ সৃষ্টির পর শিশু ক্রেতারা চট্টগ্রাম থেকে শিশুকে নিয়ে চকরিয়া থানায় আসছে।

জানা গেছে, মা নুরুন্নাহার ও মেয়ে জেসমিন আক্তার দুইজনই ভিক্ষা করে একই ঘরে দিনানিপাত করেন। ঘটনার দিন মেয়ে তার সদ্য ভূমিষ্ট নবজাতককে মায়ের কাছে রেখে পার্শ্ববর্তী দোকানে সাবান কিনতে যান। পরে এসে দেখেন, নবজাতকসহ তার মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ঘটনার তিনদিন পর তিনি ঘরে ফেরের। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এক পর্যায়ে মেয়েকে মারতে উদ্যত হয় তিনি।

এ ঘটনায় জেসমিন আক্তার বাদি হয়ে নুরুন্নাহারের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

আটক নুরুন্নাহার জানান, আমার বোনের ছেলে (ভাগিনা) নবজাতককে আদর করার কথা বলে নাতিকে নিয়ে উধাও হয়ে যায়। পরে জানতে পারি চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ব্রিজ এলাকায় ওই নবজাতককে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে।

নবজাতকের মা জেসমনি আক্তার জানান, স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় আমাকে ভরণপোষণ দেয় না। আমি ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করি। আমার দুই বছর তিন মাস বয়সী আরও একটি সন্তান রয়েছে। গত ২০ দিন আগে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমার একটি কন্যা সন্তান হয়। অভাবের সংসারে দুই সন্তানকে নিয়ে আমার স্বপ্নের কমতি ছিল না। কিন্তু একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমার স্বপ্ন ধুলিসাৎ করে দিয়েছে। এ ঘটনায় আমার মা, খালা, খালাতো ভাই জড়িত রয়েছে। টাকার বিনিময়ে আমার শিশুকে বিক্রি করে দিয়েছে তারা। আমি থানা পুলিশের সহায়তায় আমার শিশুকে উদ্ধার চাই।

চকরিয়া থানার ওসি তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, একজন শিশু নানির কাছেও নিরাপদ নয়। এই ঘটনা তারই প্রমাণ। নবজাতকের মা বাদি হয়ে নানিকে বিবাদি করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং নবজাতককে উদ্ধার করতে কাজ করছে পুলিশ।

তিনি আরও বলেন, অভিযুক্ত নানি ও অভিযোগকারী মা তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাসিরের সঙ্গে রয়েছে। তাদের নিয়ে ডুলাহাজারার ডুমখালী এলাকায় নানির বোনের বাসায় গেছেন তদন্তের জন্য। শিশুকে যেখানেই নিয়ে যাক যে কোনো উপায়ে উদ্ধার করা হবে।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm