চট্টগ্রাম নগরীর কাপাসগোলায় খালে পড়ে ৬ মাসের শিশু সেহেরিশের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। রিটে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) মোট ৭ জনকে বিবাদি করা হয়েছে।
বুধবার (৪ জুন) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান জনস্বার্থে রিটটি দায়ের করেন।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, নগর পরিকল্পনা ও অবকাঠামো ব্যবস্থাপনায় চরম গাফিলতি এবং দায়িত্বে নিয়োজিত কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রিটে শিশুটির মৃত্যুর ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ ছাড়াও খোলা ড্রেন ব্যবস্থাপনায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকায় সমস্ত খোলা ড্রেন, খাল ও ঝুঁকিপূর্ণ জায়গার তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। একইসঙ্গে একটি পরিকল্পনা দাখিল করাপূর্বক ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
গত ১৮ এপ্রিল নগরীর চকবাজারের কাপাসগোলা এলাকার হিজরা খালের নালায় মায়ের কোলে থাকা ৬ মাস বয়সী বাচ্চাসহ তিন যাত্রী নিয়ে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা খালে পড়ে যায়। রিকশায় থাকা বাচ্চার মা ও দাদিকে খাল থেকে উদ্ধার করা গেলে তৎক্ষণাৎ পাওয়া যায়নি শিশুটিকে।
ঘটনার ১৪ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থল থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে চাক্তাই খাল থেকে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল।
এমন মৃত্যু প্রথম নয়
এ ধরনের ঘটনা প্রতিবছরই ঘটে। বর্ষা এলে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়। নগরের অরক্ষিত নালা আর অদক্ষ ব্যবস্থাপনার মাঝে হারিয়ে যায় অমূল্য প্রাণ। গত বছরের জুনেও নালায় পড়ে স্রোতে তলিয়ে যায় সাত বছরের এক শিশু। ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট মুরাদপুর মোড়ে বৃষ্টির মধ্যে খোলা নালায় পড়ে নিখোঁজ হন সবজি বিক্রেতা সালেহ আহমেদ। দীর্ঘ সময় উদ্ধার অভিযান চালিয়েও তার মরদেহ পাওয়া যায়নি।
একই বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর আগ্রাবাদ এলাকায় হাঁটার সময় নালায় পড়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া। ষোলশহর এলাকায় ২০২২ সালে শিশু কামাল নালায় পড়ে নিখোঁজ হয়। তিনদিন পর মুরাদপুর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট আগ্রাবাদ রঙ্গীপাড়া এলাকায় দেড় বছর বয়সী শিশু ইয়াছিন আরাফাত নালায় পড়ে নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ১৬ ঘণ্টা পর তার মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস। ২০২৪ সালের জুনে গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় সাত বছরের শিশু সাইদুল ইসলাম নালায় পড়ে নিখোঁজ হয়। পরদিন নাছির খাল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।