চট্টগ্রামে রেলের ট্রাফিক বিভাগের ১৩ বাসা বেদখল, প্রতিমাসে বিলের টাকা গচ্চা

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রামে ট্রাফিক বিভাগের ১৩টি বাসা বেদখল হয়ে আছে। এতে প্রতিমাসে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল বাবদ বিপুল টাকা গচ্চা যাচ্ছে। একইসঙ্গে ভাড়াও মিলছে না। রেলের কিছু অসাধু কর্মচারী এসব বাসা অন্যদের ভাড়ায় দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এ ঘটনায় মহাব্যবস্থাপক তদন্তের নির্দেশ দিলে প্রায় ২০ দিনেও তা আলোর মুখ দেখেনি।

রেলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেন্ডেন্টের (সিওপিএস) অধীনে বিভাগীয় পরিবহন দপ্তরও (পূর্ব) এসব বাসার বিষয়ে অবগত নয় বলে জানিয়েছে।

চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে জান আলী হাট রেলস্টেশন এলাকায় রয়েছে এই ১৩টি বাসা। সরেজমিন দেখা গেছে, এসব বাসায় বসবাস করছে অনেকে। তাদের ঘরে বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের লাইন রয়েছে।

বাসাগুলোর হোল্ডিং হচ্ছে—টি/২, টি/৪ এর এ, বি, সি, ডি; টি/৫ এর এ, বি, সি, ডি এবং টি/১ এর এ, বি, সি, ডি।

অভিযোগ রয়েছে, রেলের কিছু অসাধু কর্মচারী এসব বাসা দখলে রেখে ভাড়া দিয়েছেন।

জানা গেছে, রেলওয়ের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেন্ডেন্টের (সিওপিএস) অধীনে থাকা বিভাগীয় পরিবহন দপ্তরের (পূর্ব) আওতায় ট্রাফিক বিভাগের এই ১৩টি বাসা। নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাফিক বিভাগের কর্মচারীরা এসব বাসা খালি সাপেক্ষে বরাদ্দ পেয়ে থাকেন। যদি কেউ বাসা ছেড়ে দেন, তাহলে পরিবহন দপ্তরকে অবহিত করতে হয়। তারপর পরিবহন দপ্তর এসব খালি বাসার বিষয় প্রকৌশল দপ্তরকে জানায়। তারা এসব বাসার রক্ষণাবেক্ষণ করে।

কোনো বাসা খালি থাকলে সেখানকার বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। যদি কোনো রেল কর্মচারী বাসা বরাদ্দ পান, তাহলে তাদের বেতন থেকে বিল ও বাসা ভাড়া কেটে রাখে রেলওয়ে।

কিন্তু এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ১৩টি বাসা থেকে একটি টাকাও রেলওয়ের কোষাগারে জমা পড়ছে না। বরং প্রতিমাসে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল বাবদ টাকা দিতে হচ্ছে।

এসব বাসা বেদখলের বিষয়ে গত ১০ সেপ্টেম্বর মহাব্যবস্থাপক মো. সবুক্তগীন তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা (ডিটিও) আনিসুর রহমানকে নির্দেশ দেন। পরে ডিটিও ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তা এনামুল হক সিকদারকে তদন্তের দায়িত্ব দিলে ২০ দিনেও তা আলোর মুখ দেখেনি।

জান আলী হাট স্টেশন মাস্টার নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘তিন মাস হয়েছে এখানে যোগদান করেছি। ১৩টি বাসা সম্পর্কে লিখিত অভিযোগ পরিবহন দপ্তরকে দিয়েছি।’

চট্টগ্রাম প্রকৌশল দপ্তর উপ-সহকারী প্রকৌশল (ষোলশহর)  কামরুল ইসলাম বলেন, ট্রাফিক বিভাগের ১৩টি বাসা প্রকৌশল দপ্তরে হস্তান্তর না করায় পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি।

এসব দেখভাল করার দায়িত্ব যার ওপর সেই চিফ অপারেটিং সুপারিনটেন্ডেন্ট শফিকুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে যান। প্রতিবেদককে তিনি বলেন, আপনি বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ককে (ডিআরএম) ফোন দিন। এরপর তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

পরে একাধিক বার মুঠোফোন কল করে সংযোগ পাওয়া যায়নি তার। এমনকি সিওপিএস দপ্তরে গিয়েও সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি শফিকুর রহমানের।

এ বিষয়ে রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক (পূর্ব) মো. সবুক্তগীন বলেন, ‘এ ঘটনায় তদন্তের আদেশ দেওয়ার হয়েছে। রিপোর্ট হাতে এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm