চান্দগাঁওয়ে চাঁদাবাজকে ছাড়াতে ‘সাংবাদিক’ সেজে বাদিকে হুমকি, পুলিশের নাম ভাঙিয়ে ভয়ভীতি

চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে চাঁদাবাজির মামলায় গ্রেফতার হওয়া আলোচিত চাঁদাবাজ আবুল বশরকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। তবে তাকে রক্ষা করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। মামলার বাদি লোকমানকে মামলা তুলে নিতে নানা ভয়ভীতি ও প্রতারণামূলক কৌশল অবলম্বন করে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

চান্দগাঁওয়ে চাঁদাবাজকে ছাড়াতে ‘সাংবাদিক’ সেজে বাদিকে হুমকি, পুলিশের নাম ভাঙিয়ে ভয়ভীতি 1

গ্রেপ্তারের পর আদালতের নির্দেশে আবুল বশর কারাগারে গেলেও তার ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য চক্রান্ত থেমে থাকেনি। বাদী লোকমান দাবি করেছেন, কথিত সাংবাদিক পরিচয়ে কিছু ব্যক্তি এবং চাঁদাবাজদের একটি চক্র তাকে মামলা তুলে নিতে বারবার হুমকি ও প্রলোভন দেখাচ্ছে। এমনকি তদন্ত কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে এবং স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলরের পরিচয় ব্যবহার করে তাকে ভয় দেখানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সাংবাদিক পরিচয়ে ভয়ভীতি, তদন্ত কর্মকর্তার নামেও প্রতারণা

রোববার (১১ মে) চান্দগাঁও থানায় দায়ের করা অভিযোগে বাদী চারজনকে সরাসরি অভিযুক্ত করেছেন—তারা হলেন কথিত সাংবাদিক কাজী নিজাম উদ্দীন, মেজবাহ উদ্দীন, রুমি আক্তার ও আলমগীর।

অভিযোগে বলা হয়, কাজী নিজাম উদ্দীন নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে সরাসরি বাদী লোকমানকে ফোন করে মামলা তুলে নিতে বলেন। তিনি নিজেকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. ফয়সাল এবং স্থানীয় কাউন্সিলর আজম খানের ঘনিষ্ঠ পরিচয় দিয়ে কথা বলেন, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও প্রতারণামূলক।

লোকমান বলেন, ‘প্রথমে সাংবাদিক পরিচয়ে যোগাযোগ করে আমাকে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়। পরে হুমকির সুরে বলা হয়, মামলা না তুললে জীবন নিয়ে বিপদে পড়তে হবে। এক পর্যায়ে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়।’

চক্রের জোর তৎপরতা, বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, চাঁদাবাজ আবুল বশরের পক্ষে থেকে একদল লোক পুলিশ এবং প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে মামলাটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। যারা মামলায় পুলিশকে সহযোগিতা করছে, তাদের বিরুদ্ধেও অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের পর বশরের বড় ভাই পরিচয়দানকারী কাজী নিজাম উদ্দীন এবং জয়নাল নামের আরেক ব্যক্তি পুলিশের সঙ্গে দেনদরবার করে বশরকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে পুলিশ কোনো আপস না করে আবুল বশরকে আদালতে সোপর্দ করে।

এদিকে কাজী নিজাম ও তার সহযোগীরা— মো. জাহেদ, মো. ইয়াসিন, জিসাদ ও তৌহিদ মিলে বাদী পক্ষকে বশরের স্ত্রীর মাধ্যমে ফাঁদে ফেলার অপচেষ্টাও চালায় বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিরাপত্তার জন্য পুলিশের সহায়তা কামনা

চাঁদাবাজ চক্রের লাগাতার চাপ ও হুমকির মুখে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বাদী লোকমান। থানায় দায়ের করা অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি ও আমার পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। এসব হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাই।’

চান্দগাঁও থানার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অভিযোগটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে এবং অভিযুক্তদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm