ছয় শিশুকে ধর্ষণে চট্টগ্রামে শিক্ষকের আমৃত্যু জেল, মাদ্রাসার ভেতরে অন্ধকার গল্প

ছয় শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় চট্টগ্রামের এক মাদ্রাসা শিক্ষককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

বুধবার (৪ জুন) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক ফেরদৌস আরা এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডিত নাজিম উদ্দিন (৪১) চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার পূর্ব ধুরং বাবুগঞ্জের বাসিন্দা। আমৃত্যু কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

জানা গেছে, নাজিম উদ্দিন ওই সময় নগরীর পাঁচলাইশের মক্কা হোটেল সংলগ্ন রহমানিয়া তাহফিজুল কোরআন একাডেমির পরিচালক ও শিক্ষক ছিলেন।

তদন্তে জানা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে তিনি মাদ্রাসার ছয় শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন।

ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন জানান, ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০-এর ৯(১) ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামিকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় নাজিম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তদন্তকালে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের ৪ মার্চ মাদ্রাসার এক শিক্ষার্থীর যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এতে নাজিমের বিরুদ্ধে একাধিক শিশু নিপীড়নের প্রমাণ মেলে। ওই দিনই মাদ্রাসার ১১ বছর বয়সী এক ছাত্রের বড় ভাই ছয় ভুক্তভোগীর পক্ষে মামলা দায়ের করেন।

নাজিম ১৫ আগস্ট ২০১৯ সালে ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে মাদ্রাসার অফিস কক্ষে নিপীড়ন। ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে ১৬ বছর বয়সী আরেক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে যথাক্রমে ১২ ও ১৩ বছর বয়সী দুই শিক্ষার্থীকে নিপীড়ন করেন। ২০২০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ও ১৮ মে আরও দুই ছাত্রকে যৌন সহিংসতার শিকার করা হয়।

ভুক্তভোগীদের ওপর চাপ
অভিযোগে বলা হয়েছে, নাজিম শিক্ষার্থীদের ধর্ষণের কথা পরিবারকে জানাতে ভয়ভীতি ও শারীরিক নির্যাতন করতেন। পুলিশের অভিযোগপত্র দাখিলের পর ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর আদালতে বিচারকার্য শুরু হয়। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া হয়, আসামি পক্ষ থেকে দুইজন সাক্ষ্য দেন। যুক্তিতর্ক শেষে আদালত চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেন।

এ মামলায় দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নারী ও শিশু অধিকার রক্ষায় একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

জেজে/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm