চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশে নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবনে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবিকে কেন্দ্র করে তাণ্ডব চালানোর ঘটনায় আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিসহ প্রধান অভিযুক্ত মো. দিদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সোয়া ১০টার দিকে নাজিরপাড়া রেললাইনসংলগ্ন এলাকা থেকে তাকে আটক করে পাঁচলাইশ মডেল থানা পুলিশ।
পাঁচলাইশ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, চাঁদাবাজির ঘটনায় করা মামলার তদন্তে অভিযান চালিয়ে মো. দিদারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, মামলার বাদী আহাম্মদ ছফা পাঁচলাইশ থানাধীন হামজারবাগের জিলানী লেইনে নুর মোহাম্মদ গংদের মালিকানাধীন নির্মাণাধীন ‘হোসাইন টাওয়ার’ ভবনের কেয়ারটেকার হিসেবে গত পাঁচ বছর ধরে কর্মরত। অভিযোগ অনুযায়ী, মো. দিদার, ইউনুছ ও সাজ্জাদসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজন কয়েক দিন ধরে ভবনটিতে চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না দিলে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার (১৪ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কেয়ারটেকারের অনুপস্থিতিতে অভিযুক্তরা ভবনের অষ্টম তলায় অনধিকার প্রবেশ করে। সেখানে তারা প্রকল্প প্রকৌশলী মো. ওমর ফারুক ইফাজসহ শ্রমিকদের গালিগালাজ ও মারধর করে আহত করে। একপর্যায়ে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
প্রাণভয়ে প্রকল্প প্রকৌশলী তার কাছে থাকা শ্রমিকদের সাপ্তাহিক খোরাকির ৫০ হাজার টাকা এবং ব্যবহৃত একটি আইফোন ১০ এক্স সেট অভিযুক্তদের হাতে তুলে দেন। এরপরও তারা চাঁদার দাবি পূরণ না হলে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দেওয়া এবং বড় ধরনের ক্ষতির হুমকি দেয়।
ঘটনার পর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পাঁচলাইশ মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তে পুলিশ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে মো. দিদারকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মুরাদপুর এলাকার একটি পরিত্যক্ত ভবন থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিনসহ ১২ রাউন্ড গুলি এবং ৯টি শটগানের কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে পৃথক একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।


