লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক : তালবিয়া পাঠ হজের বিশেষ আমল ও ইবাদত

“লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।” অর্থাৎ “আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো অংশীদার নেই। আমি হাজির। সব প্রশংসা ও অনুগ্রহ শুধুই তোমার। সব রাজত্ব তোমার।”

তালবিয়ার গুরুত্ব

আল্লাহর একত্ববাদের ঘোষণা সম্বলিত ‘তালবিয়া’ পড়া হজের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি হজ ও ওমরার উদ্দেশ্যে ইহরামের নিয়ত করার পর থেকে পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ শুরু করার আগ পর্যন্ত পড়তে হয়। এ তালবিয়া হলো মহান আল্লাহর তাওহিদের অনন্য ঘোষণা। হজে অংশগ্রহণকারীরা তালবিয়া পড়ার মাধ্যমেই মহান আল্লাহর দরবারে হাজির হওয়ার ঘোষণা দেয়।

জিলহজ মাসের ফজিলত

পবিত্র জিলহজ মাস মানে হজের মাস। হজের তিনটি মাস শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ। এর মধ্যে প্রধান মাস হলো জিলহজ মাস। এই মাসের ৮ থেকে ১৩ তারিখ এই ছয় দিনেই হজের মূল কার্যক্রম সম্পাদন করা হয়।

কোরআন কারিমে আল্লাহতাআলা বলেন: “হজ সম্পাদন সুবিদিত মাসসমূহে। অত:পর যে কেউ এই মাসগুলোতে হজ করা স্থির করে তার জন্য হজের সময়ে স্ত্রীসম্ভোগ, অন্যায় আচরণ ও কলহবিবাদ বিধেয় নহে। তোমরা উত্তম কাজে যা কিছু করো আল্লাহ তা জানেন এবং তোমরা পাথেয়র ব্যবস্থা করবে আত্মসংযমই শ্রেষ্ঠ পাথেয়। হে বোধসম্পন্ন ব্যক্তিগণ তোমরা আমাকে ভয় করো” (সুরা-২-বাকারা-আয়াত-১৯৭)।

মর্যাদাপূর্ণ মাসসমূহ

বছরের বারো মাসের চারটি মাস বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন। এই চার মাসের অন্যতম হলো জিলহজ মাস। চারটি মাস মর্যাদাপূর্ণ। এই চার মাস হলো:

  1. জিলকদ
  2. জিলহজ
  3. মহররম
  4. রজব

প্রথম দশকের আমল

বিশেষ কিছু দিন এবং রাত এমন রয়েছে যেসব দিন ও রাতের ইবাদত-বন্দেগিতে মহান আল্লাহতাআলা অপরাধীর অপরাধ ক্ষমা করেন। তন্মধ্যে:

  • কদরের রাত
  • বরাতের রাত
  • দুই ঈদের রাত
  • রমজানের আমল
  • আশুরার আমল
  • জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিনের আমল ইত্যাদি

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন: “জিলহজের ১০ দিনের ইবাদত আল্লাহর নিকট অন্য দিনের ইবাদতের তুলনায় বেশি প্রিয়। প্রতিটি দিনের রোজা এক বছরের রোজার মতো আর প্রতি রাতের ইবাদত লাইলাতুল কদরের ইবাদতের মতো।”

কোরবানির ফজিলত

হজরত জায়েদ ইবনে আরকাম (রা.) বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ (সা.) এর কাছে সাহাবাগণ বললেন: “হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! এ কোরবানি কী?” উত্তরে তিনি বললেন: “তোমাদের পিতা ইব্রাহিম (আ.) এর সুন্নত।”

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন: “যে ব্যক্তি সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করল না সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটেও না আসে।”

তাকবিরের বিধান

পবিত্র জিলহজ মাসের ৯ তারিখ ফজর থেকে ১৩ তারিখ আসর পর্র্যন্ত প্রতি ফরজ নামাজের পর একবার তকবির বলা ওয়াজিব। পুরুষেরা স্বাভাবিক স্বরে আর মহিলারা নিচু স্বরে এ তকবির বলবেন। তাকবির হলো:
“আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।”

দোয়া

“হে আল্লাহ! জীবিত ও মৃত মুসলিমদের আপনি ক্ষমা করুন। আমাদের আপনার সন্তোষজনক আমল করার তাওফিক দান করুন আপনার ক্রোধ ও নিষিদ্ধ বিষয় থেকে দূরে রাখুন। মুসলিমরা পৃথিবীর যে যেখানে রয়েছে তাদের আপনি হেফাজত করুন মুসলিমদের দুশ্চিন্তা দূর করুন দুর্দশাগ্রস্তদের দুর্দশা দূর করুন এবং তাদের আপনার বিশেষ তত্ত্বাবধানে হেফাজত করুন।”

লেখক : ইসলামি গবেষক ও কলামিস্ট

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm