১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেলেন চট্টগ্রামের ১০৬ তরুণ, ঘুষ-তদবির ছাড়াই অনন্য দৃষ্টান্ত

ঘুষ, তদবির কিংবা কোনো প্রকার প্রভাব ছাড়াই মাত্র ১২০ টাকার আবেদন ফি দিয়ে বাংলাদেশ পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি পাচ্ছেন চট্টগ্রাম জেলার ১০৬ জন তরুণ-তরুণী। সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও মেধাভিত্তিক এই নিয়োগ প্রক্রিয়া জেলায় এক অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে।

১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেলেন চট্টগ্রামের ১০৬ তরুণ, ঘুষ-তদবির ছাড়াই অনন্য দৃষ্টান্ত 1

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম সানতু বিপিএম-বারের দিকনির্দেশনায় এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।

১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেলেন চট্টগ্রামের ১০৬ তরুণ, ঘুষ-তদবির ছাড়াই অনন্য দৃষ্টান্ত 2

এসপি জানান, তিন ধাপের মূল্যায়নের মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের চূড়ান্ত করা হয়েছে। এতে দারিদ্র্যপীড়িত, দিনমজুর, কৃষক ও জেলের সন্তানরাও কেবল মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই নির্বাচিত হয়েছেন।

১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেলেন চট্টগ্রামের ১০৬ তরুণ, ঘুষ-তদবির ছাড়াই অনন্য দৃষ্টান্ত 3

আবেদন থেকে নিয়োগ পর্যন্ত যাত্রা

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলেন ৩ হাজার ৩০৭ জন। প্রথম ধাপে (২০-২২ আগস্ট) কাগজপত্র যাচাই ও শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষায় অংশ নেন ২ হাজার ২০১ জন প্রার্থী, এর মধ্যে উত্তীর্ণ হন ৯২৯ জন।

দ্বিতীয় ধাপে ১০ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় ধাপে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৩৪ জন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন ১০৬ জন। এছাড়া আরও ১৪ জন প্রার্থীকে অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়েছে।

আনন্দের অশ্রু ও স্বজনদের উচ্ছ্বাস

তালিকা প্রকাশের পরপরই উত্তীর্ণ প্রার্থী ও তাদের পরিবারে বইতে থাকে আনন্দের জোয়ার। অনেকে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি।
পটিয়ার রুবেল বড়ুয়া, আবু হানিফ বাবু এবং রাউজানের সজিব বড়ুয়া বলেন, “কোনো সুপারিশ ছাড়াই চাকরি হবে, এটা বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। চূড়ান্ত তালিকায় নাম দেখে মনে হয়েছে—এটাই প্রকৃত স্বচ্ছ নিয়োগ।”

পরবর্তী ধাপ

চূড়ান্তভাবে নির্বাচিতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর, ঢাকার রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে। সে জন্য নির্বাচিত প্রার্থীদের ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইন্স, ছোটপুল হালিশহরে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশের নিয়োগ সর্বদা স্বচ্ছতা, সততা ও যোগ্যতার মাপকাঠিতে পরিচালিত হয়। আজ যারা নির্বাচিত হয়েছেন তারা শুধু পুলিশ বাহিনীর নয়, পুরো জাতির গর্ব। তাদের সততা, শৃঙ্খলা ও দেশপ্রেম জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।’

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm