চট্টগ্রামের গ্রাম আদালতে ২৩২৯ মামলা নিষ্পত্তি, ক্ষতিপূরণ আদায় দেড় কোটি

চট্টগ্রাম জেলায় গ্রাম আদালতে দায়ের হওয়া ৫ হাজার ৬৮৭টি মামলার মধ্যে ২ হাজার ৩২৯টি নিষ্পত্তি করা হয়েছে। এছাড়া ক্ষতিপূরণ আদায় করা হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা। ১৫টি উপজেলায় ১৯১টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত কার্যক্রম চলমান আছে। এসব ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ৪ দিনের আবাসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ চট্টগ্রামে গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে পরিকল্পনা প্রণয়ন বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নেয়। এ সময় এসব তথ্য জানানো হয়।

অনুষ্ঠানের শুরুতে গ্রাম আদালত প্রকল্প ও প্রচার প্রচারণায় বৃদ্ধিতে সরকারের পরিকল্পনা বিষয়ক তথ্য চিত্র উপস্থাপন করা হয়। এতে দেখা গেছে, গত ১৪ মাসে চট্টগ্রাম জেলায় ১৯১ টি ইউনিয়নে মোট ৫৬৮৭টি মামলা গ্রাম আদালতে দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৩২৯টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে। ১ কোটি ৪৭ লাখ ৭৩ হাজার ৭২৩ টাকা ক্ষতিপূরণ আাদায় হয়েছে। ১৪১২টি নারী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মামলা গ্রাম আদালতে গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা আদালত হতে ১১৯১ টি মামলা নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গ্রাম আদালতে পাঠানো করা হয়েছে।

সারাদেশের ৬১টি জেলায় (৩ পার্বত্য জেলা ব্যাতীত) ৪৬৮টি উপজেলার ৪৪৫৭টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত চলমান আছে। চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি উপজেলার ১৯১ টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত কাজ করছে।

কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপপরিচালক মো. নোমান হোসেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম জেলার ১৫টি উপজেলায় ১৯১টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত কার্যক্রম চলমান আছে। গ্রাম আদালতকে সক্রিয়করণের জন্য বাংলাদেশ সরকার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি’র সহযোগিতায় একটি প্রকল্প ও চলমান আছে। ২০০৯ সালে থেকে এ প্রকল্পটির প্রথম পর্যায় শুরু হয়েছে বর্তমানে প্রকল্পের তৃতীয় এবং সর্বশেষ পর্যায়ের কাজ চলমান আছে। আমরা ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম জেলা রিসোর্স টিমের ৭৫ জন সদস্যের প্রশিক্ষণ শেষ করেছি। ১৯১ ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের ৪ দিনের আবাসিক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছি। পর্যায়ক্রমে সকল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের প্রশিক্ষণ শেষ করা হবে।

কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রামের স্থানীয় সরকার শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার এমএমএন জামিউল হিকমা।

বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ ৩য় পর্যায় প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার সাজেুদুল আনোয়ার ভূঁঞার সঞ্চালনায় কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্যসচিব ও দৈনিক আমার দেশ’র আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি, অতিরিক্তি পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) কাজী মো. তারিক আজিজ, উপপরিচালক মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম আতিয়া চৌধুরী, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. আবুল বাশার, ইসলামিক ফাউন্ডেন্ডশন চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মীর মেুহাম্মদ নেয়ামত উল্ল্যাহ।

আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার, বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্পের প্রকল্প সমন্বয়কারী ফারহানা ইদ্রিস, উপজেলা সমন্বয়কারী মোহছেনা আক্তার মিনা, বাবুল আরাফাত, বাদশা আলম, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ‘ঘাসফুল’র প্রতিনিধি সৈয়দ মামুনুর রশিদ, লিরো’র নির্বাহী পরিচালক নুরজাহান খান, সিসিএল প্রতিনিধি অনুরাজ দাশ গুপ্ত, সংসপ্তক’র সহকারী পরিচালক জয়নাব বেগম চৌধুরী, প্রত্যাশী’র সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম।

কর্মশালায় বক্তারা আরও বলেন, গ্রামীণ জনসাধারণ যেন স্থানীয় ছোটখাটো দেওয়ানি ও ফৌজদারি বিরোধ অল্প সময়ে স্বল্প খরচে সমাধান করতে পারে, এজন্যই মূলত গ্রাম আাদালত চালু করেছে। ২০০৬ সালে গ্রাম আদালত আইন প্রণয়ন করেছে। ২০১৬ সালে গ্রাম আদালত বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৪ সালে গ্রাম আদালত আইন সংশোধন করে যুগোপযোগী করা হয়েছে।

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm