জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৬ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বোধন আবৃত্তি পরিষদ চট্টগ্রামের উদ্যোগে ‘নজরুল জন্মজয়ন্তী ১৪৩২’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (১ জুন) সন্ধ্যা ৭টায় থিয়েটার ইনস্টিটিউটে নজরুলের প্রলয়শিখা কাব্যগ্রন্থ এবং অগ্রন্থিত রচনা থেকে কবিতার একক-দ্বৈত-ত্রৈয়ী-বৃন্দআবৃত্তি, গান এবং নৃত্য পরিবেশন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন কবি-গল্পকার-ঔপন্যাসিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী। তিনি নজরুলের জীবন ও সাহিত্যের বৈচিত্র্যতা এবং রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে নজরুলের সম্পর্কের গভীরতা নিয়ে আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী নজরুলকে নির্দিষ্ট কোনো গণ্ডিতে বেঁধে রাখতে পারেনি। বাঙালি মুসলিমরা তেমন গান শুনতো না। নজরুল কিছু কালজয়ী ইসলামি সঙ্গীত রচনার মাধ্যমে মুসলিমদের সংগীতমুখী করেন। অসাধারণ কিছু শ্যামা সঙ্গীত রচনার জন্য তিনি হিন্দুদের মধ্যেও সমান জনপ্রিয় হয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন ধর্মের মানুষের গোঁড়ামি- কূপমন্ডুকতার বিরুদ্ধে নজরুল ছিলেন সর্বদা বিদ্রোহী। এছাড়াও প্রেম সংক্রান্ত রচনায় তো তিনি সিদ্ধহস্ত। নজরুলের সাম্যবাদ-দেশপ্রেম- অসাম্প্রদায়িকতাকে চেতনায় ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
প্রলয়শিখা কাব্যগ্রন্থ থেকে মোহিনী সঙ্গীতা সিংহ গ্রন্থিত এবং মাইনুল আজম চৌধুরী নির্দেশিত ‘নব আলোকের জয়’ বৃন্দ আবৃত্তির মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। আমন্ত্রিত শিল্পী হিসেবে আবৃত্তি করেন—‘দৃষ্টি চট্টগ্রাম’র সহ-সভাপতি আবৃত্তিশিল্পী বনকুসুম বড়ুয়া, তারুণ্যের উচ্ছ্বাস’র সাংগঠনিক সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী সেঁজুতি দে এবং উচ্চারক আবৃত্তি কুঞ্জ’র সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী শামীমা ইয়াছমিন মুন্নী।
একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন সঙ্গীতশিল্পী গৌরী নন্দী এবং তারই পরিচালনায় সুরের খেয়া সাংস্কৃতিক চর্চা কেন্দ্র দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে দীপশিখা নৃত্য গোষ্ঠী।
বোধন সদস্যদের মধ্যে একক-দ্বৈত-ত্রৈয়ী আবৃত্তিতে অংশ নেন আবৃত্তিশিল্পী শিমুল নন্দী, জাভেদ হোসেন, লাভলী আক্তার নিশাত, রীমা দাশ, মোহিনী সঙ্গীতা সিংহ, অনিমেষ পালিত, সত্যজিৎ চক্রবর্তী, অর্চি দত্ত, হোসনে আরা নাজু, ইলা বড়ুয়া, মোহাম্মদ তাহসিন, সুজাতা বড়ুয়া, অনির্বাণ বনিক সৃজন, আনমোল চৌধুরী, আরজু সেন শ্লোক, ঐশিকা নন্দী, কৈশিকা মল্লিক।
বোধন-এর শিশুকিশোর সদস্যদের অংশগ্রহনে প্রলয়শিখা কাব্যগ্রন্থের ‘জাগরণ’ কবিতার বৃন্দআবৃত্তির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। এটির নির্দেশনা দেন আবৃত্তিশিল্পী সন্দিপন সেন একা এবং মহড়া পরিচালনা করেন আরজু সেন শ্লোক।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আবৃত্তিশিল্পী প্রণব চৌধুরী। অনুষ্ঠানের পরিকল্পনায় ছিলেন কবি মোহিবী সঙ্গীতা সিংহ। তবলায় সঙ্গত করেন রিপন সেনগুপ্ত ও আরজু সেন শ্লোক, কী—বোর্ডে সঙ্গত করেন অজয় চক্রবর্তী।