চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কর্মরত দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সাত সাংবাদিকের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার (২ জুন) চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোহাম্মদ ইলিয়াস ভূঁইয়া নামে এক ব্যক্তি মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় মোট ১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি এসএম ফোরকান আবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম চৌধুরী (আমাদের সময়), সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম (নয়াদিগন্ত), সাবেক সভাপতি এম হেদায়েত (কর্ণফুলী), সাবেক সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুমার চৌধুরী লিটন (জনকণ্ঠ), প্রথম আলোর প্রতিনিধি কৃষ্ণ চন্দ্র দাস এবং খবরের কাগজের প্রতিনিধি মোসলেহ উদ্দিন। এছাড়া বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সীতাকুণ্ড ইউনিটের সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল ইমরানসহ আরও দুজনকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
অথচ ঘটনার পর সাংবাদিকদের কাছে ইলিয়াস ভূঁইয়া দাবি করেছিলেন, তার উপর হামলা চালিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়ক। কিন্তু পরবর্তীতে রহস্যজনকভাবে সেই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না থাকা সাতজন সাংবাদিককেও মামলায় জড়িয়ে দেওয়া হয়, যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাব এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, সাংবাদিকদের হয়রানি করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলা করা হয়েছে এবং অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও মামলার অন্যতম আসামি এম হেদায়েত বলেন, “মামলার এজাহারে আমাদের নাম থাকলেও কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। এটি পুরোপুরি হয়রানিমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা।”
নয়াদিগন্তের সহ-সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, “আমাদের বাদীর সঙ্গে কোনো বিরোধ ছিল না। আমরা সাংবাদিক, মারামারির সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। যদি হামলার ঘটনা ঘটে থাকে, তাহলে নিশ্চয়ই সিসিটিভি ফুটেজ থাকবে—সেগুলো বিশ্লেষণ করলেই বোঝা যাবে, আমাদের জড়ানোটা পুরোপুরি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক।”
সীতাকুণ্ড প্রেসক্লাবের সভাপতি এসএম ফোরকান আবু বলেন, “আমরা মামলার বাদিকে চিনি না, এমনকি কখন কারা তাকে আক্রমণ করেছে সেটাও জানি না। সাংবাদিকদের হয়রানির উদ্দেশ্যে এই মামলা করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি বাদির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সাংবাদিক মহলে চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিক সংগঠনগুলো দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।