চট্টগ্রাম রেলে জাল স্বাক্ষরে দুই কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টা

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রামে স্বাক্ষর ও সিল জাল করে প্রায় দুই কোটি টাকা আত্মসাৎ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে রিসিভ নোটের (আর-নোট) মাধ্যমে দুটি বিল হিসাব অধিকর্তার অফিসে নিলে অডিটরের হাতে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে। তবে কে বা কারা জাল আর-নোটি দুটি দিয়েছেন, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তারা।

এদিকে যে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আর-নোট জমা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, সেই নামে কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্বও নেই বলে জানা গেছে।

হিসাব বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এটির দায় প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরের। এই জাল আর-নোট কে বা কারা দিয়েছে, তা সিসিটিভি ক্যামেরা দেখে শনাক্তের পর ব্যবস্থা নেবে। তবে ওই বিভাগের কয়েকজন কর্মচারী জানান, একমাত্র যে সিসিটিভি ক্যামেরাটি আছে, সেটিও কাজ করে না।

সোমবার (২ জুন) অর্থ ও হিসাব অধিকর্তা অধীনে থাকা সিআরবির বিভাগীয় অর্থ ও হিসাব বিভাগ (ডিএফএ/স্টোর্স) এ জালিয়াতি-কাণ্ড ধরা পড়ে।

ডিএফএ/স্টোর্স সূত্রে জানা গেছে, প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তরের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর ও সিল জাল করে ‘এসএস আর এন্টারপ্রাইজ’র নামে দুটি আর-নোটের মাধ্যমে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা তোলার জন্য ডিএফএ/স্টোর্সে জমা দেওয়া হয়। এরপর আর-নোট দুটি যাচাই করতে গেলে অফিসের অডিটর ফারজানা জালিয়াতি বিষয়টি ধরে ফেলেন।

পরে এই নোট দুটি বাহককে খুঁজতে গেলে, আর পাওয়া যায়নি।

তবে রেলওয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, টাকা তুলতে ডিএফএ বিভাগে যেতে হয় না। কাগজপত্র যাচাই করে বুক অ্যান্ড বাজেট শাখায় গেলে চেক ইস্যু হয় নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। এছাড়া প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক দপ্তর থেকে এই বিল পাঠানো কথা বলা হলেও, ‘এসএস আর এন্টারপ্রাইজ’ নামে কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানই নেই।

এদিকে মঙ্গলবার সরেজমিনে ডিএফএ বিভাগ গিয়ে দেখা গেছে, একটি মাত্র সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে। এ ঘটনার পর আরও তিনটি নতুন ক্যামেরা লাগানোর তোড়জোড় চলছে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ অর্থ উপদেষ্টা সাইফুল ইসলামের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ যাচাই করে চক্রের হোতাকে ধরার চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা (পূর্ব) মো. সাইদুর রহমান সরকার চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, ‘জাল কাগজপত্র দাখিল করে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা বিল আত্মসাতের চেষ্টা করেছে।’

হিসাব বিভাগের মতো এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায়, কিভাবে এমন জাল বিল জমা হয়। আর ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে বিল জমাকারীও কিভাবে সবার অগোচরের পালিয়েছে, সেই প্রশ্ন উঠেছে।

জেএস/ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm