চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়াকে নিয়ে ব্যাঙ করে ব্যানার-ফেস্টুন ছাপানোসহ কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার কারণে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার আওতাধীন পটিয়া উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির ৬ নেতাকে শোকজ করেছে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি।
শনিবার (২১ জুন) চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
জেলা বিএনপি থেকে শোকজ প্রাপ্তরা হলেন—পটিয়া পৌরসভা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম সওদাগর, উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব খোরশেদ আলম, পৌরসভা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব গাজী আবু তাহের, পৌরসভা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব মোজাম্মেল হক, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মঈনুল আলম ছোটন। এরা সবাই দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য এনামুল হক এনামের অনুসারী।
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানো নোটিশে বলা হয়েছে, গত ১০, ১১ ও ১২ জুন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়ার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে উস্কানিমূলক, কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান এবং ব্যাঙ্গাত্মক ব্যানার ফেস্টুন প্রদর্শন ও সংগঠনবিরোধী ঔদ্ধত্য আচরণ, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে। যার ভিডিও ও ছবিসহ সকল সুনির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণাদি জেলা বিএনপির কাছে সংরক্ষিত আছে।
রাজনৈতিক শিষ্ঠাচার বহির্ভুত ও দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী এ ধরণের উস্কানিমূলক, কুরুচিপূর্ণ স্লোগান ও নোংরা ভাষায় অশালীন বক্তব্যের কারণে দলীয় ভাবমূর্তি যথেষ্ট ক্ষুণ্ন ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে।
অতএব দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুস্পষ্ট অপরাধে কেন আপনাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী ৫ দিনের মধ্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারী সম্মুখে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব প্রদানের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।
জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরে পটিয়া বিএনপিতে একাধিক দলীয় কোন্দল চলে আসছে। গত একসপ্তাহ ধরে এসব কোন্দল প্রকাশ্যে রূপ নেয়। দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া গ্রুপ ও এনামুল হক এনাম গ্রুপ।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন বলেন, জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য, শ্লোগান, ফেস্টুন ও ঔদ্ধত্য আচরণ করার কারণে ৬ জনকে শোকজ করা হয়েছে। ৫ দিনের মধ্যে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে জবাব দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। জবাব সন্তোষজনক না হলে পরবর্তী ব্যাপারে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পটিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও শোকজ পাওয়া খোরশেদ আলম বলেন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া নিজ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে ব্যারাজ্জা, কুত্তা ডেকেছে প্রকাশ্যে সমাবেশে। তিনি এসব ডাকার কারণে দলীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ সভা করেছেন। তার বিরুদ্ধে আমরা গত ১৪ জুন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তিনি বলেন, এর আগে দলীয় কার্যালয়ে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান পণ্ড করতে ইদ্রিচ মিয়া প্রশাসনকে দিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়ে নিজের অপরাধ ডাকতে আমাদেরকে শোকজ করা হয়েছে। ইদ্রিস মিয়ার বিরুদ্ধে আমরা কেন্দ্রে অভিযোগ করেছি। আমরা যারা আন্দোলন ও মামলা-হামলার শিকার হয়েছি, তাদেরকে শোকজ করে নাজেহাল করা হচ্ছে। তাকে নোটিশ করার কথা ছিল দলের, তা না করে উল্টো আমাদেরকে শোকজ করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ অগঠনতান্ত্রিক ও অগণতান্ত্রিক, এটির প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ডিজে