প্রতারণার মাধ্যমে শত কোটি টাকা আত্মসাৎ মামলার আসামি ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেওয়া আশরাফ আলীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকার পুলিশ। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি টিম চট্টগ্রামভিত্তিক নির্যাস গ্রুপের এমডি আশরাফ আলীকে পল্টন থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
আশরাফ আলী চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মির্জাখীল ডিলা পাড়া এলাকার আবদুল হকের ছেলে। চট্টগ্রাম নগরের সুগন্ধা আবাসিক এলাকার ১ নম্বর রোডের এ-ব্লকে তার অফিস।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা ওয়ারী বিভাগের এসআই আব্দুল মোমিন বলেন, আশরাফ ঢাকায় নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের হয়ে মিছিল মিটিংয়ে সক্রিয় ছিল। তার বিরুদ্ধে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানা ও চট্টগ্রামের চকবাজার থানায় মামলা রয়েছে। তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক।
জানা গেছে, একসময় চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারে সিটি ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের উপমহাব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন। সারা দেশে ৩২টি শাখার মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে অন্তত ১০০ কোটি টাকা আমানত নিয়ে তা ফেরত দেয়নি সিটি ইনভেস্টমেন্ট। দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই প্রতারণার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলেন আশরাফ আলী। ২০১৬ সালে গ্রাহকেরা আমানত ফেরত না পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেন। এরপর আশরাফ আলী নিজের পরিচয় দেন বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন তিনি৷ গ্রাহকের আমানত ফেরত না দিয়ে উল্টো হত্যার হুমকি ও মামলায় তাদের ফাঁসানোর হুমকি দেন সিটি ইনভেস্টমেন্টের কর্মকর্তারা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দেওয়া আশরাফ আলী গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর জামায়াতে ইসলামীর এক প্রভাবশালী নেতার ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন।
ওই প্রভাব ব্যবহার করে গত মাসের শেষ দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের ১০টি ঘাট থেকে ক্যারেট ব্যবসার কাজ আদায় করে নেন। ওই প্রকল্পের দাম ধরা হয়েছে মাত্র ১৩ লাখ টাকা, তবে সেখানে মাসে আয় হয় ২০ লাখ টাকারও বেশি। এই ইজারা প্রক্রিয়ায় আশরাফের অংশীদার ছিলেন ওই জামায়াত নেতার ঘনিষ্ঠ মহিউদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী।
সিপি