পুলিশের তালিকাভুক্ত চট্টগ্রামের ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্নাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১০ মে) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর বাকালিয়া থানা পুলিশ তাকে বহদ্দারহাটের বাড়ৈপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এর আগে গত ১৫ মার্চ রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি থেকে সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় তার সঙ্গে তামান্নাও ছিল। তবে তিনি পুলিশের উপস্থিতি দেখে পালিয়ে যান।
এরপর পরদিন তামান্না ফেসবুক লাইভে এসে ‘কাড়ি কাড়ি টাকা ঢেলে’ তার স্বামী সাজ্জাদকে ছাড়িয়ে আনার ঘোষণা দেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিও বার্তায় তামান্না আরও বলেন, আমার জামাই গতকাল রাতে অ্যারেস্ট হইছে। এটা নিয়ে এতো হাই হুল্লাস করার কিছু নাই। মামলা যখন আছে, অ্যারেস্ট হবে। এগুলো নিয়ে এতো টেনশন করা, দুঃখ প্রকাশ করা, কান্নাকাটি করার কিছুই নাই। আপনারা যারা ভাবতেছেন আমার জামাই অ্যারেস্ট হইছে, আর কোনোদিন বের হতে পারবে না, ওদের জন্য এক বালটি সমবেদনা। এখন যারা এই ঘটনা ঘটাইছে, তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না; মাথায় রাইখো। এতোদিন আমরা পলাতক ছিলাম, এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা। আমার জামাই আইনি প্রক্রিয়া শেষে আমার কাছে আসবে। তখন খেলা শুরু হবে। খেলা মাত্র শুরু করছো তোমরা, শেষ করবো আমরা। আমার জামাই সাজ্জাদের যারা সাপোর্টার আছো সবাই দোয়া করবা, যাতে ১০-১২ দিনের মধ্যে জামিন করাই ফেলতে পারি। ঠিক আছে, ধন্যবাদ।’
গত ৩০ মার্চ রাতে নগরীর বাকলিয়ার অ্যাক্সেস রোড এলাকায় একটি প্রাইভেটকারকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়ে দুইজনকে খুন করা হয়। নিহতরা হলেন—খতিয়ার হোসেন মানিক ও মো. আবদুল্লাহ। এ ঘটনায় আহত হন আরও দুজন। এর নেপথ্যের কারিগর হিসেবে নাম আসে সন্ত্রাসী সাজ্জাদের। আরেক ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ও সাজ্জাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এমনটি ঘটেছে বলে জানায় পুলিশও। মূলত সরোয়ারকে মারতেই সেই হামলা চালায় সাজ্জাদের লোকজন।
খুনের ঘটনায় পরদিন ১ এপ্রিল বাকলিয়া থানায় নিহতদের একজন বখতিয়ার হোসেন মানিকের মা ফিরোজা বেগম একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় কারাবন্দি সাজ্জাদ হোসেন ও তার স্ত্রী তামান্না শারমিনকে হুকুমের আসামি করা হয়।
মামলার পরে ৯ এপ্রিল হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পান সন্ত্রাসী সাজ্জাদের স্ত্রী তামান্না। বিচারপতি মো. মাহবুব উল আলম এবং বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের আদালত তার আগাম জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করলে ১৩ এপ্রিল আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. রেজাউল হক তামান্নাসহ তিনজনকে সাত দিনের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন ।
এদিকে কারাবন্দি ছোট সাজ্জাদের নামে নগরীর বিভিন্ন থানায় খুন-চাঁদাবাজিসহ অন্তত ১৫টি মামলা রয়েছে। তাকে ধরতে সিএমপির পক্ষ থেকে পুরস্কারের ঘোষণাও দেওয়া হয়।
জেজে/ডিজে