হাটহাজারীতে সুন্নি-কওমি সংঘর্ষের ঘটনায় ওসি প্রত্যাহার

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্টের জেরে সুন্নি ও কওমীপন্থিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু কাওসার মাহমুদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১১টার দিকে তাকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়। তার স্থলে থানার নতুন দায়িত্বে এসেছেন পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাক আহম্মেদ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাটহাজারী সার্কেল) কাজী তারেক আজিজ।

এর আগে রোববার বিকালে হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। এতে ওসির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয় এবং তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। একই দাবিতে রাতে শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ করেন।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) ঈদে মিলাদুন্নবীতে এক যুবক চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা লক্ষ্য করে আঙুল উঁচিয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করার জের ধরে হাটহাজারীতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে গভীর রাতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। জুলুস থেকে ফেরত সুন্নীপন্থিদের বিভিন্ন বাসে কওমী মতাদর্শের লোকজন হামলা করার পর সুন্নীপন্থীরাও সংঘবদ্ধ হয়ে পাল্টা হামলা চালায়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১৮০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় দেড়শতাধিক আহতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং গুরুতর আহত ২০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আনা হয়।

আহতদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় জানা যায়। এরা হলেন—আবু তাহের (১৬) ও হাসান মারুফ (১৭)।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাটহাজারী বাস স্ট্যান্ড মোড়ে রাতে জুলুস থেকে ফেরার পথে সুন্নীপন্থিদের বেশ কয়েকটি বাস ভাঙচুর করে কওমীপন্থিরা। এর মধ্যে বাসে থাকা অনেকে ইট-পাটকেলের আঘাতে আহত হন। পরে সুন্নীপন্থিরাও ধাওয়া দেন কওমীপন্থিদের। এ নিয়ে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটে। একপর্যায়ে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি সড়ক অবরোধ করে রাখে দারুল উলুম মাদরাসার শিক্ষার্থীরা। এর ফলে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

সংঘর্ষের ঘটনায় জনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। শনিবার রাত ১০টা থেকে রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টা পর্যন্ত এ আদেশ কার্যকর হয়।

এর আগে হাটহাজারী মাদ্রাসার সামনে মধ্যমা আঙ্গুল দেখিয়ে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার ঘটনায় আরিয়ান ইব্রাহীম (২০) নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। ঘটনার পর ওই যুবক ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় দুঃখপ্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেও এ ঘটনায় হাটহাজারীতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে জশনে জুলুস থেকে ফেরার পথে ফটিকছড়ি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শফিকিয়া দরবার শরীফ এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রোববার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সমঝোতা বৈঠক হয়। সেখানে উভয়পক্ষের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে আহতদের চিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm