চট্টগ্রামে এনসিপির ডাকে সাড়া দেননি বড় ব্যবসায়ীরা, গোলটেবিলে ছিলেন না ঢাকার নেতারাও
সাংবাদিক ডেকে তাড়িয়ে দিলো আয়োজকরা
ঘটা করে সেমিনারের আয়োজন করলেও চট্টগ্রামের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের কেউ সাড়া দেননি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ডাকে। আবার ঢাকার শীর্ষ নেতারাও আসেননি চট্টগ্রামে। অন্যদিকে এই বৈঠকে সাংবাদিকদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও একপর্যায়ে তাদের সময় বেঁধে দিয়ে বের করে দেওয়া হয় অনুষ্ঠানস্থল থেকে।
শনিবার (১৭ মে) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ‘এনসিপি মিট দ্যা বিজনেস পার্সন’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে।
এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম গোলটেবিল বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হবেন— এমন কথা বলা হলেও তিনি সেখানে যুক্ত হননি। সশরীরে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা ও যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুব আলম মাহির ঢাকা থেকেই আসেননি।
উপস্থিত সাংবাদিকরা জানান, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ হাসান আলী, যুগ্ম মুখ্য সংগঠক ইমন সৈয়দ এবং যুগ্ম সদস্য সচিব সাগুপ্তা বুশরা মিশমাই শুধু সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রামের শীর্ষ ও মাঝারি পর্যায়ের ব্যবসায়ীদের কাউকেই সেখানে দেখা যায়নি। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কয়েকজন দেখা গেলেও পরিচিত মুখ কেউ ছিলেন না।
তবে চট্টগ্রামে জাতীয় নাগরিক পার্টি মিডিয়া উইংয়ের মুখপাত্র আরফাত আহমেদ রনি চট্টগ্রাম প্রতিদিনের কাছে দাবি করেন, ‘কেএসআরএম-বিএসআরএমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।’
তাদের নাম-পদবি জানতে চাইলে রনি বলেন, ‘এটা কনফিডেনশিয়াল।’
বৈঠকে নাহিদ ইসলাম বা হাসনাত আব্দুল্লাহর অনুপস্থিতি নিয়ে মিডিয়া উইংয়ের মুখপাত্র বলেন, ‘ঢাকায় জরুরি বৈঠক পড়ে যাওয়াতে তারা উপস্থিত থাকতে পারেননি।’
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, সাংবাদিকদের গোলটেবিল বৈঠকে আমন্ত্রণ জানিয়েও বৈঠক শুরু হওয়ার আগে তাদের অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে চলে যেতে বলেন এনসিপি নেতারা। চট্টগ্রামের সাংবাদিক আবু আজাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সকালেই এনসিপি চট্টগ্রাম মহানগর শাখার মিডিয়া উইং থেকে প্রোগ্রামটি কাভার করার জন্য সাংবাদিকদের আহ্বান জানিয়ে বার্তা পাঠানো হয়। প্রোগ্রামটি বিকেল ৬টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হয় প্রায় সন্ধ্যা ৭টায়। কিছুক্ষণ পর হঠাৎ মঞ্চ থেকে ঘোষণা আসে—এটি এনসিপি ও ব্যবসায়ীদের একটি ইনডোর প্রোগ্রাম। ২০ মিনিটের মধ্যে সাংবাদিকসহ অন্যান্য উপস্থিত সবাইকে প্রোগ্রাম স্থল ত্যাগ করতে হবে। প্রশ্ন হলো, যদি এটি এনসিপির অভ্যন্তরীণ প্রোগ্রামই হয়ে থাকে, তাহলে সাংবাদিকদের কেন আমন্ত্রণ জানানো হলো? আর আমন্ত্রণ জানিয়ে উপস্থিত হওয়ার পর এভাবে বের হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া কতটা শোভন?’
তবে যুগ্ম সদস্য সচিব সাগুপ্তা বুশরা মিশমা বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আন-ইনভাইটেড অনেকে সাংবাদিক পরিচয়ে এসে পড়েন। আমরা শুধু তাদের বলেছি, ২০ মিনিট সময়ের মধ্যে যা প্রশ্ন করার, সেটা করে চলে যেতে। এটা নিয়ে কেউ যদি দুঃখ পেয়ে থাকেন, তাহলে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।’
সিপি