রেলের চাদর-কম্বল ধোলাইয়ে ‘ভাই ভাই লন্ড্রি’র অভিনব প্রতারণা, শেষমেশ বাতিল!

সর্বনিম্ন দর, কিন্তু মিথ্যা তথ্য

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল চট্টগ্রামে ট্রেনের প্রথম শ্রেণির কোচের স্লিপিং কেবিনের চাদর, বেড ধোলাই ও ইস্ত্রির (আয়রন) কাজের দরপত্র পাওয়ার পর ধরা পড়েছে দরদাতার প্রতারণা। রেলের জায়গা ‘দখলে নিয়ে’ গড়ে ওঠা একটি ওয়াশিং সেন্টারের ঠিকানা ব্যবহার করে ৫৯ লাখ টাকায় দরপত্রটি পান দরদাতা। তার এমন প্রতারণা রেল কর্মকর্তাদের হাতে ধরা পড়লে ৬৩ লাখ টাকার দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়া সুপারিশ করে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি।

রেলের চাদর-কম্বল ধোলাইয়ে ‘ভাই ভাই লন্ড্রি’র অভিনব প্রতারণা, শেষমেশ বাতিল! 1
এসএম ওয়াশিং সেন্টারের এই ঠিকানা ব্যবহার করে দরপত্র বাগিয়ে নেয় ‘ভাই ভাই লন্ড্রি’

শনিবার (১৭ মে) চট্টগ্রামের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তৌষিয়া আহমেদ তদন্ত কমিটির রিপোর্টের পর দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা ‘মেসার্স মদিনা শালকর’কে কাজ দেওয়ার সুপারিশ করেন। এর আগে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজটি পান ‘ভাই ভাই লন্ড্রি’। পরে তাদের ওই দরপত্র বাতিল হয়।

জানা গেছে, ট্রেনের প্রথম শ্রেণির কোচের সিপ্লিং কেবিনের যাত্রীদের জন্য চাদর, কম্বল, বেডের ব্যবস্থা থাকে। এসব নিয়মিত ধোলাই করে পরিষ্কার রাখতে হয়। এসব ব্যবহার্য জিনিস ধোলাইয়ের জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দরপত্র আহ্বান করে। সর্বনিম্ন দরদাতাকে তারা ধোলাইয়ের কাজ দেয়।

গত ২৪ এপ্রিল ‘ভাই ভাই লন্ড্রি’ ৫৯ লাখ টাকায় সর্বনিম্ন দরদাতা হন। কিন্তু তারা শর্ত না মেনে মিথ্যা তথ্য দেন। পরে রেলের কর্মকর্তাদের তদন্ত প্রতারণার বিষয়টি উঠে আসে।

সর্বনিম্ন দরদাতা ‘ভাই ভাই লন্ড্রি’র কোনো নিজস্ব দোকান না থাকলেও তারা রেলের জায়গা ‘দখল করে’ গড়ে ওঠা ‘এসএম ওয়াশিং সেন্টার’র ঠিকানা ব্যবহার করে। এসএম ওয়াশিং সেন্টারটি আইস ফ্যাক্টরি রোডের মুক্তিযোদ্ধা ক্লাবের বিপরীতে অবস্থিত। তথ্য যাচাই করতে গিয়ে তাদের এমন প্রতারণা ধরা পড়ে রেলের মাঠ পর্যায়ের কমিটির হাতে।

পরে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা ‘মেসার্স মদিনা শালকর’র স্বত্বাধিকারী মোশাররফ হোসেনের যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই করে তাদের ৬৩ লাখ টাকায় ধোলাইয়ের কাজ দেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া ৭০ লাখ টাকায় এতে তৃতীয় সর্বনিম্ন দরদাতা হয় ‘তাকবীর’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

এ বিষয়ে জানতে ‘ভাই ভাই লন্ড্রি’র স্বত্বাধিকারী মো. অলীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

চট্টগ্রামের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তৌষিয়া আহমেদ জানান, সর্বনিম্ন দরদাতার প্রতারণা বিষয়টি তদন্তে উঠে এসেছে। তাই আমরা তাকে বাদ দিয়ে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজটি দেওয়ার সুপারিশ করেছি।

ডিজে

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm