৭ বছরে ৫ কোটি টাকা হাওয়া কর্ণফুলীতে, চালান-হিসাব কিছুই নেই

ইউএনও-ব্যাংক-এলজিইডির রহস্যময় নাটক

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় গত সাত অর্থবছরে বিভিন্ন সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে আদায়কৃত প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ভ্যাট ও আয়কর সরকারিভাবে কোষাগারে জমা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) থেকে শুরু করে উপজেলা প্রশাসনের কোনো পক্ষই এসব অর্থ জমার বৈধ চালান দেখাতে পারছে না। অথচ প্রতিটি প্রকল্পেই ঠিকাদারদের বিল থেকে নিয়ম অনুযায়ী কর কর্তন করা হয়েছে। এই অর্থ কোথায় গেছে, তার উত্তর নেই কোনো দপ্তরের কাছেই।

এ বিষয়ে এলজিইডি অফিসের পক্ষ থেকে একাধিকবার কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা পরিষদের কাছে লিখিতভাবে চিঠি পাঠানো হলেও কোনো সদুত্তর মেলেনি। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি স্থানীয় ঠিকাদার, জনপ্রতিনিধি ও ইজারাদারদের ধারণা, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উচিত বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা।

পাঁচ কোটি টাকার লেনদেনের ধোঁয়াশা

কর্ণফুলী উপজেলা ২০১৭ সালের ২৯ এপ্রিল কার্যক্রম শুরু করে। ওই বছরের ভ্যাট-ট্যাক্সের প্রায় দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা পটিয়া উপজেলায় জমা হয়েছিল, কারণ সে সময় ট্রেজারির দায়িত্ব পটিয়া উপজেলায় ছিল। কিন্তু ২০১৮-২০২৪ পর্যন্ত ছয়টি অর্থবছরের হিসাব অনুযায়ী কর্ণফুলীতে আদায়কৃত আয়কর ছিল দুই কোটি তিন লাখ আঠারো হাজার দুইশ সাতত্রিশ টাকা এবং ভ্যাট ছিল তিন কোটি চার লাখ ছিয়াত্তর হাজার তিনশ পঞ্চান্ন টাকা। ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের তথ্য যুক্ত করলে এই অঙ্ক পাঁচ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। তবে ইউএনও অফিস, উপজেলা পরিষদ, এলজিইডি দপ্তর, ট্রেজারি শাখা ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কেউই এসব অর্থ সরকারিভাবে জমা দেওয়ার কোনো রেকর্ড দেখাতে পারেনি।

দায় এড়ানো ও রহস্যজনক নীরবতা

চট্টগ্রাম বিভাগের কন্ট্রোলার অব একাউন্টস, জেলা প্রশাসক কার্যালয়, জেলা হিসাব সংরক্ষণ অফিস, আয়কর বিভাগ, ইউএনও অফিস, উপজেলা হিসাব অফিস এবং সোনালী ব্যাংক কর্ণফুলী শাখার সাবেক ও বর্তমান ব্যবস্থাপকগণের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। অধিকাংশ দপ্তর দায়িত্ব এড়াতে অন্যকে দোষারোপ করছে। অনেক কর্মকর্তার বক্তব্য, আদায়কৃত অর্থ জমা দেওয়ার দায়িত্ব ছিল ইউএনও ও উপজেলা পরিষদের। সেই সময় যাঁরা দায়িত্বে ছিলেন, তারা এর সঠিক ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। ফলে প্রশাসনের মধ্যে দায় এড়ানোর প্রবণতা প্রকটভাবে ধরা পড়েছে।

ঠিকাদার ও জনপ্রতিনিধিদের ক্ষোভ

কর্ণফুলীর ইউএনও অফিসে কর্মরত সিএ দীপু চাকমা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে নারাজ। তবে ঠিকাদারদের বিশ্বাস, তিনি সব জানেন। তাদের মতে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। এমন মন্তব্যও উঠেছে যে, দুদকের উচিত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা।

অর্থবছরভিত্তিক বরাদ্দ ও করের হিসাব

২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, যার মধ্যে ৫% আয়কর কাটা হয় ৩২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এবং সাড়ে ৭% হারে ভ্যাট কাটা হয় ৪৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা, আয়কর ২৬ লাখ এবং ভ্যাট ৩৯ লাখ টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৪ কোটি ২৯ লাখ ৫৩ হাজার ৪৫০ টাকা, আয়কর ২১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৭২ টাকা ও ভ্যাট ৩২ লাখ ২১ হাজার ৫০৮ টাকা। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৯ কোটি ১৩ লাখ ৮৬ হাজার ৩০৬ টাকা, আয়কর ৪৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩১৫ টাকা এবং ভ্যাট ৬৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৭২ টাকা। ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৯ কোটি ৯৪ লাখ ২০ হাজার টাকা, আয়কর ৪৯ লাখ ৭১ হাজার এবং ভ্যাট ৭৪ লাখ ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৫ হাজার টাকা, আয়কর ২৭ লাখ ৮৫ হাজার ২৫০ টাকা এবং ভ্যাট ৪১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৭৫ টাকা। মোট বরাদ্দ ছিল ৪০ কোটি ৬৩ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫৬ টাকা। মোট আদায়কৃত আয়কর ছিল দুই কোটি তিন লাখ ১৮ হাজার ২৩৭ টাকা এবং ভ্যাট ছিল তিন কোটি চার লাখ ৭৬ হাজার ৩৫৫ টাকা।

অডিটেও মিলেছে অসঙ্গতি

২০২২ সালের শেষ দিকে হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের একটি অডিট টিম কর্ণফুলীতে এসে তদন্ত চালায়। অডিটের সময় ওই বিশাল অঙ্কের ভ্যাট ও আয়করের অস্বচ্ছতা ধরা পড়ে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, অডিট টিমকে মোটা অঙ্কের সুবিধা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল।

চালানহীন কর আদায় ও সময়ক্ষেপণ

আইন অনুযায়ী, ঠিকাদার ও সরবরাহকারীদের বিল পরিশোধের সময় আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪-এর ৫২ ধারা এবং ১৯৮৪ সালের আয়কর বিধিমালার ১৬ বিধি অনুযায়ী উৎস কর কর্তন করতে হয় এবং তা নির্ধারিত চালান ফরমে কোষাগারে জমা দিতে হয়। তবে কর্ণফুলীতে সে নিয়ম মানা হয়নি। বহু ক্ষেত্রে চালান জমা দেওয়ার প্রমাণ নেই। আদায়কৃত রাজস্ব ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে রাজস্ব তহবিলে জমা হওয়ার পর তা উন্নয়ন তহবিলে স্থানান্তরিত হয় এবং দরপত্র ও পিআইসি পদ্ধতিতে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। এসব প্রকল্পের বিল পরিশোধের সময় ভ্যাট ও আয়কর কাটা হলেও, পরবর্তীতে তা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়নি বলে তথ্য মিলেছে।

এলজিইডির একের পর এক চিঠি

কর্ণফুলীর এলজিইডির এক সাবেক প্রকৌশলী জানান, এলজিইডি একাধিকবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর চিঠি পাঠিয়ে ভ্যাট-ট্যাক্স জমা সংক্রান্ত বিষয়টি জানায়। পরিষদের পক্ষ থেকে তা বারবার উপেক্ষা করা হয়। তিনি বলেন, একদিন ইনকাম ট্যাক্স অফিসার এলজিইডিতে আসলে দীপু চাকমা জানিয়েছিলেন, পরিষদের একাউন্ট প্রাইভেট ব্যাংকে থাকায় চালানে টাকা জমা দিতে পারছেন না এবং প্রতি চালানে তিনশ টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। অথচ এলজিইডিকে এ বিষয়ে আগে কিছু জানানো হয়নি। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরীও বিষয়টি এড়িয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে।

টানা সাত বছর রাজস্ব জমা হয়নি

কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদ থেকে পরপর ৬-৭ অর্থবছর ধরে কোনো ভ্যাট কিংবা আয়কর সরকারি কোষাগারে জমা হয়নি। একইসাথে সংশ্লিষ্ট কোনো অডিটও পরিচালিত হয়নি। এলাকাবাসী ও বিশেষজ্ঞরা বিষয়টি দুর্নীতির কৌশল না কি শুধুই দায়িত্বে অবহেলা—তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হস্তক্ষেপ এবং দ্রুত অডিটের দাবি উঠেছে।

উন্নয়ন তহবিলেও অনিয়মের ছাপ

প্রতিটি অর্থবছর শেষে স্থানীয় সরকারের রাজস্ব তহবিল থেকে অর্থ উন্নয়ন তহবিলে স্থানান্তরের নিয়ম রয়েছে। এরপর প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হয় উপজেলা প্রকৌশলীর মাধ্যমে। কিন্তু কর্ণফুলী উপজেলায় এই বিধান পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। এতে করে সরকারি প্রক্রিয়ার প্রতি উপেক্ষা ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলার ঘাটতি স্পষ্ট হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী ‘জানেন না’ কিছুই

বর্তমান উপজেলা প্রকৌশলী তাসলিমা জাহান জানান, তিনি জানেন না উন্নয়ন তহবিলে কত টাকা স্থানান্তর হয়েছে কিংবা ভ্যাট-ট্যাক্স আদায় করা হয়েছে কি না। কারণ তিনি আগে দীর্ঘ সাড়ে ১০ বছর আনোয়ারা উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। এই দীর্ঘ কর্মকালেও নিয়ম অনুযায়ী স্কিম বাছাই কমিটির কোনো সভা কর্ণফুলীতে হয়নি। তাহলে স্কিমগুলো অনুমোদিত হলো কিভাবে—এ প্রশ্ন উঠছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

আদায় হলেও ব্যয়ের ভাউচার নেই

২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত হাট-বাজার, ঘাট, জলাশয় ইজারা বাবদ রাজস্ব খাতে মোটা অঙ্কের টাকা আসার কথা থাকলেও, সেসব অর্থ কোথায় গেছে তা নিয়ে আছে ধোঁয়াশা। টাকা ব্যয় হলেও উপজেলা পরিষদ কিংবা ইউএনও’র দপ্তর কোনো প্রকার সুনির্দিষ্ট হিসাব দিতে পারেনি। ব্যয়ের সপক্ষে নেই কোনো ভাউচার। ভূমি উন্নয়ন কর বাবদ ২ শতাংশ অর্থ রাজস্বে জমা হওয়ার কথা থাকলেও তারও কোনো সঠিক তথ্য নেই।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা লঙ্ঘনের অভিযোগ

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, যে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প থেকে উৎসে কর কর্তন করে তা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। অথচ কর্ণফুলী উপজেলা বারবার এই নির্দেশনা উপেক্ষা করেছে। ইউএনও মাসুমা জান্নাত এবং সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছেন উন্নয়ন তহবিল থেকে।

আয়কর ও ভ্যাট গেল কোথায়?

কর্ণফুলী এলজিইডির সাবেক একজন প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এলজিইডি অফিস থেকে বিল জমা দেওয়ার সময় নিয়ম অনুযায়ী ভ্যাট ও আয়কর কর্তন করে বিল পাঠানো হয় উপজেলা পরিষদে। কিন্তু উপজেলা পরিষদ ওই বিল থেকে চেক পাশ করিয়ে নগদ টাকা তুলে ফেলে। এরপর তা সরকারি ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেরা রেখে দেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

দুটি অফিসের বক্তব্যে বিরোধ

ইউএনও অফিসের কনফিডেনশিয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট (সিএ) দীপু চাকমা বলেন, কিছুদিন আগে চালান ফরমে অর্থ জমা দেওয়া হয়েছে। অথচ এলজিইডির প্রকৌশলী তাসলিমা জাহান বলেন, তিনি এখনও এমন কোনো চালান ফরম দেখেননি। দুই পক্ষের এই সাংঘর্ষিক বক্তব্য পরিস্থিতিকে আরও সন্দেহজনক করে তুলেছে।

কর্মকর্তার দায় এড়ানো ও ব্যাংকের অস্পষ্টতা

উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মফিজুর রহমান জানান, এসব প্রকল্প এলজিইডি বাস্তবায়ন করে, তাই তিনি কিছু জানেন না। সোনালী ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজার বলেন, তার দায়িত্বকালীন সময়ে উপজেলা পরিষদ বড় অঙ্কের ভ্যাট-আয়কর জমা দিয়েছে বলে মনে হয় না। বর্তমান ম্যানেজার দীপেস দাশ জানান, প্রকল্প কর্মকর্তা বিল পাস করলে ব্যাংক কার্যকর করে, তবে ভ্যাট-আয়করের জমার বিষয় তিনি নিশ্চিত নন।

ইউএনওর হঠাৎ সভা ও সাংবাদিকদের এড়িয়ে যাওয়া

সাংবাদিকদের প্রশ্নে ইউএনও মাসুমা জান্নাত প্রথমে জানান, ‘আমি কিছু জানি না, খোঁজ নেব।’ পরে হঠাৎ রাজস্ব সভা ডাকেন, কিন্তু সেখানেও কার্যকর কোনো ব্যাখ্যা দেননি। এরপর আর সাংবাদিকদের ফোনও রিসিভ করেননি। সূত্র জানায়, বর্তমানে তিনি ঢাকায় প্রশিক্ষণে রয়েছেন।

সাবেক চেয়ারম্যানের বক্তব্যে নতুন দিক

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী বলেন, তার সময় কোড না থাকায় এডিপি বরাদ্দ পাননি, তবে বাজার ও রেজিস্ট্রির খাত থেকে প্রতি বছর ২ থেকে ২.৫ কোটি টাকা রাজস্ব পেতেন। ইউএনও কার্যালয়ের সিএ দীপু চাকমা ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে ভ্যাট-আয়করের চেক পটিয়া সোনালী ব্যাংকে জমা দিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। যদিও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে অর্থ জমা হয়নি বলেও ইঙ্গিত দেন।

যা বললেন তারা

স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মো. নোমান হোসেন বলেন, ‘অভিযোগটি গুরুত্বপূর্ণ। উন্নয়ন প্রকল্প থেকে কর কাটা হলেও তা কেন কোষাগারে জমা হবে না, তা বোধগম্য নয়। এতদিন কেউ লিখিত অভিযোগ না করায় জানা সম্ভব হয়নি। আমি খোঁজ নিতে বলেছি।’

চট্টগ্রাম কর অঞ্চল-১-এর কর কমিশনার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এ ধরনের তথ্য আমাদের জানা ছিল না, এখন আপনার কাছ থেকেই জানলাম। আমরা খোঁজ নিচ্ছি। কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের ভ্যাট-ট্যাক্স ফাইল পরীক্ষা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ডিভিশনাল কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস কর্মকর্তা এস এম মনজুর আহমেদ বলেন, ‘উপজেলা থেকে কোনো বিলের বিপরীতে ভ্যাট-ট্যাক্স চালান কপি আমাদের অফিসে এসেছে কিনা তা যাচাই করা হবে। উপজেলা প্রশাসনের এসব বিষয়ে অবগত থাকার কথা। কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস অফিস গুরুত্ব দিয়ে অডিটের উদ্যোগ নেবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এ বিষয়ে কর কমিশনারই সঠিক ব্যক্তি, প্রয়োজনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।’

ঢাকা হিসাব মহানিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের উপ-হিসাব মহানিয়ন্ত্রক (অডিট) মোসা. ফেরদৌসী বেগম বলেন, ‘বিল অনুমোদনের সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভ্যাট-ট্যাক্স কর্তন হওয়ার নিয়ম রয়েছে। সারা দেশে একই কোড ব্যবহার হয়। তবে উপজেলা পরিষদে হেরফের অসম্ভব নয়। অডিট করলে সব বেরিয়ে আসবে। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’

স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন অডিট অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রক ও নিরীক্ষক জেনারেল মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৯ মে কর্ণফুলীকে দেশের ৪৯০তম উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। ২০১৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের গেজেট প্রকাশ হয় ১১ সেপ্টেম্বর এবং ২৫ অক্টোবর শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্ব নেন কর্ণফুলীর প্রতিষ্ঠাতা উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক চৌধুরী।

জেজে/সিপি

যখনই ঘটনা, তখনই আপডেট পেতে, গ্রাহক হয়ে যান এখনই!

ksrm