বিতর্কের মুখে কর্ণফুলীর ইউএনও হঠাৎ স্ট্যান্ড রিলিজ, আসছেন নাছরীন আক্তার
ভুয়া প্রকল্পে কোটি টাকা খরচ, অঘোষিত কমিশন-কেলেঙ্কারি
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুমা জান্নাতকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সহকারী সচিব হিসেবে বদলি করা হয়েছে। তাঁর স্থলে নতুন ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন নাছরীন আক্তার।
মঙ্গলবার (৩ জুন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব বারিউল করিম খান এবং চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ নুর উল্লাহ নূরীর স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি আদেশে এই তথ্য জানানো হয়।
২০২৪ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মাসুমা জান্নাত কর্ণফুলীর ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব নেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়মসহ একাধিক বিষয়ে তাকে ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে চট্টগ্রাম প্রতিদিনে ২৩ মে ‘১ কোটি টাকার কাজে ৩০ লাখ ঘুষ, চট্টগ্রামে উন্নয়ন প্রকল্পে ‘কমিশন সাম্রাজ্য’ এবং ২ জুন ‘৭ বছরে ৫ কোটি টাকা হাওয়া কর্ণফুলীতে, চালান-হিসাব কিছুই নেই’ শিরোনামে দুটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।
এদিকে নাছরীন আক্তারকে কর্ণফুলী উপজেলার ইউএনও হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের এক আদেশে। তিনি প্রশাসনের ৩৬তম ব্যাচের কর্মকর্তা। এর আগে তিনি ফেনী, কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জে সহকারী কমিশনার হিসেবে এবং পরে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তার নিজ জেলা লক্ষ্মীপুর।
বিতর্কের কেন্দ্রে মাসুমা জান্নাত
কর্ণফুলী উপজেলায় গত সাত অর্থবছরে বিভিন্ন সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প থেকে আদায়কৃত প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ভ্যাট ও আয়কর সরকারিভাবে কোষাগারে জমা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। ইউএনও মাসুমা জান্নাত এবং সাবেক উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তারা বিভিন্ন ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করেছেন উন্নয়ন তহবিল থেকে।
এর আগে কর্ণফুলী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ১% উন্নয়ন তহবিলের প্রকল্প অনুমোদনে ইউএনও মাসুমা জান্নাত ও এসিল্যান্ড রয়া ত্রিপুরার বিরুদ্ধে ৩০% পর্যন্ত ‘কাটমানি’ আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন একাধিক ইউপি সদস্য। জনপ্রতিনিধিদের দাবি, প্রকল্প অনুমোদনের আগে ও চেক তুলতে গিয়ে বাধ্যতামূলকভাবে নগদ অর্থ দিতে হচ্ছে, যা একরকম অঘোষিত ‘কমিশন’ হিসেবে গৃহীত হচ্ছে।