চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে তিন দফা দাবিতে চলমান প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনে অংশ নিয়েছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে ক্যাম্পাসে মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে সেখানে সংবাদ সম্মেলন করেন।
গত কয়েক মাস ধরে চুয়েটসহ দেশের বিভিন্ন প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চাকরিক্ষেত্রে প্রকৌশলীদের প্রতি বৈষম্যের প্রতিবাদে একযোগে আন্দোলন করে আসছেন। তারা ৩ দফা দাবির ভিত্তিতে এই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের দাবি সমূহ হলো—৯ম গ্রেডে ন্যূনতম যোগ্যতা বিএসসি রেখে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ, ১০ম গ্রেডকে কোটামুক্ত করে বিএসসিদের জন্য সুযোগ করে দেয়া এবং বিএসসি ছাড়া যেন কেউ প্রকৌশলী পদবি ব্যবহার না করতে পারে তা নিশ্চিত করা।
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা জানান, ডিপ্লোমা ডিগ্রীধারীদের জন্য অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা ও কোটা থাকায় বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য চাকরির সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ছে। প্রকৌশলী পদ ও সংশ্লিষ্ট সুযোগ-সুবিধা শুধুমাত্র বিএসসি ডিগ্রীধারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা উচিত। তাদের আন্দোলনের লক্ষ্য হলো সবার জন্য ন্যায় ও সমান অধিকার নিশ্চিত করা। তাদের এই অবস্থান চুয়েট ক্যাম্পাসে একটি সুসংগঠিত এবং প্রতিবাদী পরিবেশ তৈরি করেছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিরাজুল ইসলাম মিরাজ জানান, ১০ম গ্রেডের পদটি উপ-সহকারী প্রকৌশলীদের। কিন্তু যারা আসলেই বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার, তারাই আবেদন করতে পারে না। আবার অনেকে ১০ম গ্রেড থেকে অন্যায়ভাবে পদোন্নতি পেয়ে ৯ম গ্রেডে যাচ্ছে, তাদের সেটার যোগ্যতাটাও নেই। কারণ এর জন্য বিএসসি সার্টিফিকেটটা প্রয়োজন, তাদের সেটা নাই। তাদের একসময় ১০ম গ্রেডে আবেদন করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে তারা পুরোপুরি এটিকে নিজেদের করে নেয়। চাকরিক্ষেত্রে ডিপ্লোমা সিন্ডিকেট যেন প্রকৌশল খাতকেই ধ্বংস করছে। আমরা এর প্রতিবাদে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
যন্ত্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম জানান, সারাদেশে চলমান বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের তিন দফা দাবির পক্ষে একাত্মতা পোষণ করে আমরা আজ আমাদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে এই বিক্ষোভ সমাবেশে এসেছি। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের দাবিগুলো সারাদেশের সাধারণ জনগণের কাছে পেশ করছি। পাশাপাশি ডিপ্লোমাদের অযৌক্তিক ৭ দফার বিরুদ্ধে আমি তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, খুব দ্রুতই যেন আমাদের দাবিগুলো মেনে নেওয়া হয় এবং এই প্রকৌশল খাতকে ডিপ্লোমাদের সিন্ডিকেট মুক্ত করা হয়।
এনএন/ডিজে