আর মাত্র একদিন পর পবিত্র ঈদুল আজহা। শেষ মুহূর্তের বেচাকেনায় জমজমাট পশুর হাট। অনেকে ইতোমধ্যে গরু কিনে ফেলেছেন আবার অনেকে শেষ মুহূর্তে বাজারের অবস্থা দেখে নেবেন। তবে গরু-ছাগল কেনাবেচার সঙ্গে জমে উঠেছে কামারপট্টিগুলোও। কোরবান করার জন্য ও মাংস কাটার জন্য ছুরি, দা, চাপাতি, বটি কিনতেও ভিড় করছে মানুষ। একইসঙ্গে মাংস কাটার জন্য খাইট্ট্যা বা কাঠের গুঁড়িও কিনে নিচ্ছে লোকজন। তবে কামাররাও পণ্য তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করলেও ক্রেতার সমাগম কম বলে জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৫জুন) সরেজমিন দেখা গেছে, কোরবানি উপলক্ষে নগরীর কামারশালায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। ক্রেতারা গরু কেনার পরপরই কোরবানি দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত দা, ছুরি, চাপাতি, বটি ইত্যাদি সরঞ্জাম কেনার জন্য রিয়াজউদ্দীন বাজার, বকশির হাট, চকবাজারসহ নগরীর বিভিন্ন কামারশালায় যাচ্ছেন। অনেকে আবার পুরনো জিনিসে শান দিতেও যাচ্ছেন। আবার ঈদ উপলক্ষে ফুটপাতেও ভাসমান ব্যবসায়ীরা এক সরঞ্জাম বিক্রি করছেন।
দোকানভেদে পশু জবাই, চামড়া ছাড়ানো ও মাংস কাটার জন্য দা, ছুরি, বিভিন্ন সাইজের চাকু, বটি, চাপাতি, কুড়াল, ছোটো ও বড়ো গাছের টুকরো, শুকনো খড়, মাদুর, টুকরি, হুগলি-চাটাই, বালতি বিক্রি করতে দেখা গেছে।
কাঠের গুঁড়ি আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকায়। দা-বটি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০০ টাকায়। পশুর চামড়া আলাদা করার ছোট ছুরি ৪০ থেকে ৮০ টাকা, মাঝারি ৫০ থেকে ৯০ টাকা এবং বড় ছুরি ৮০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া লম্বা ছুরি ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা, চাপাতি ৪৫০ থেকে ৭০০ টাকা, কুড়াল ১৬০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া অনেকে পুরাতন দা-বটি-ছুরি ২০ থেকে ৫০ টাকায় শান দিয়ে নিচ্ছেন।
কাঠের গুঁড়ি কিনতে আসা ওরম ফারুক বলেন, ‘মইজ্জ্যারটেক থেকে ১ লাখ ৮ হাজার টাকা দিয়ে গরু কিনলাম। এখন গরুর মাংস কাটতে কাঠের গুঁড়ি নিতে আসলাম। সঙ্গে লম্বা ছুরি ও চাটাই নিতে রিয়াজুদ্দিন বাজারের এসেছি।’
পুরনো ছুরি শান দিতে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গরুর চামড়া ছাড়াতে ভালো ধারালো ছুরি প্রয়োজন। গত বছরের ছুরিটা দিয়ে যাবে, সেজন্য শান দিতে আসলাম।’
রিয়াজউদ্দীন বাজারে দা-ছুরি কিনতে আসা নাইব হোসাইন বলেন, ‘এতদিন বৃষ্টির জন্য গরুর কিনতে পারিনি। আজ বৃষ্টি নাই দেখে কিনে নিয়ে আসলাম। গরু কোরবানির জন্য চাটাই কিনলাম। চামড়া আলাদা করতে বড়-ছোট আকারের দা-ছুরি কিনতে আসলাম।’
আসাদুল ইসলাম নামে এক বিক্রেতা বলেন, ‘কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ক্রেতারা গরুর কেনার পরপরই কাঠের গুঁড়ি, চাটাই, টুকরি, মাদুর, চালের রুটি তৈরির সরঞ্জাম এবং কুড়াল, মাংস কাটার জন্যে গাছের বড়ো টুকরো কিনতে ভিড় জমান। গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ার কারণে কেউ গরু কিনতে পারেনি সেজন্য মাংস কাটার সরঞ্জাম কিনতে ক্রেতাদের ভিড় আশানুরূপ ছিলো না। আজ থেকে আবারও জমে উঠেছে বাজার।’
ডিজে